কতিপয়ের প্রশ্নের জবাব


 প্রশ্নঃ1। জাতপাত মানুষের যদি বানানো হয় তবে অবতাররা নিচু জাতের ঘরে আসে না কেন? 

প্রশ্ন ঃ2। সাদা রঙ্গের দেব দেবী দের বিভিন্ন উপমায় প্রশংসিত করা হয়েছে কেন?


উত্তর 1। ঃ হারীতসংহিতায় একাদশ শূদ্র জাতির উল্লেখ আছে যার একটি জাতির নাম হচ্ছে গোপ জাতি।

যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও বলরাম পালিত হয়েছিলেন। স্বয়ং ব্রহ্মা যবনের ঘরে জন্ম নিয়েছিলেন।

এখন কিছু রেফারেন্স দিচ্ছি।

যজুর্বেদ -26/2  যথেমাং বাচং কল্যানীমাবদানিজনেভ্যঃ।ব্রহ্ম  রাজান্যাভ্যাং শূদ্রায়চার্যায় চ স্বায় চারণায় । প্রিয়ো দেবানংদক্ষিণায়ৈ দাতুরিহ ভুয়াসময়ং মে কামংসমৃধ্যতামুপ মাদো নমতু।।

অর্থাৎ ব্রাহ্মন,ক্ষত্রিয়, বৈশ্য  শূদ্র স্বীয় স্ত্রী ও সেবকাদি এবং অন্যান্য সকল মানুষকে ই আমি এই মঙ্গলদায়িনী বেদ বাণীর উপদেশ দান করেছি তোমরা ও সেই রুপ অন্যদের উপদেশ করো।।


গীতা 4/13 চাতুর্বণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ

অর্থা’ৎ আমি গুন ও কর্মের বিভাগ  অনুসারে চার বর্ণের সৃষ্টি করেছি।।


শতপথ ব্রাহ্মণ 3ঃ2ঃ1ঃ40  তস্মাদপি (দীক্ষিতম্ ) রাজন্যং বা  বৈর্শ্যং বা ব্রাহ্মণ ইত্যেব ক্রয়ান , ব্রাহ্মণো হি জায়তে যো যজ্ঞাজ জায়তে ।।

অর্থাৎ বৈশ্য বা ক্ষত্রিয় যজ্ঞে দীক্ষিত হয়ে ব্রাহ্মণত্ব গ্রহন করতে পারবেন।।


এখন প্রশ্ন হতে পারে বর্ণ করার দরকার কি ছিল? 

উত্তর ঃ মনু -10/4  ব্রহ্মণৎ ক্ষত্রিয়ো বৈশ্যস্ত্রয়ো বর্ণা দ্বিজতয়ঃ।

চতুর্থ একজতিস্ত  শূদ্রো নাস্তি তু পঞ্চমঃ  ।।

অর্থাৎ বিদ্যাধায়ন দ্বারা দ্বিতীয় জন্ম গ্রহণ করার কারণে ব্রাহ্মন ক্ষত্রিয় এবং  বৈশ্য দ্বিজ। এই প্রকার বিদ্যাধায়ন দ্বারা দ্বিতীয় জন্ম প্রাপ্ত না করার কারণে চতুর্থ জাতি শূদ্র।।


জন্মনা জায়তে শূদ্রঃ সংস্কারাত্ দ্বিজ উচ্যতে।
বেদ পাঠাত্ ভবেদ্ বিপ্রঃ ব্রহ্ম জানাতি ব্রাহ্মণঃ।।
অর্থাত্ মানুষ শুদ্র হয়ে জন্মে। সংস্কার (উপনয়ন) করে হয় দ্বিজ । দ্বিজ বেদ পাঠ সম্পন্ন করে হয় বিপ্র। বেদ পাঠ করে জ্ঞান অর্জন ও সাধনা করে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করলে করে ব্রহ্মকে জেনে ব্রাহ্মন হয়।
সুতরাং ব্রাহ্মন হওয়া মুখের কথা নয় বা বংশগতও নয়।



সাদা আর কালোর কথা অবান্তর কেননা সনাতন ধর্মে ভগবান শ্রী কৃষ্ণ , বিষ্ণ ,  রাম , মহাকালী , জগন্নাথদেব প্রভৃতির রং সকলেই জানে।তাই বলা যায় কেবল সনাতন ধর্মেই রং তো দুরের কথা গাছ থেকে যে কোন প্রানীকে সম্মানীত করা হয়েছে যা অন্য ধর্মে বিরল।



সব কথার এককথা হল

"কিবা বিপ্র, কিবা ন্যাসী, শূদ্র কেনে নয়। যেই কৃষ্ণতত্তবেত্তা সেই গুরু হয়।।" - শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, চৈতন্যচরিতামৃত। তাই ব্রাহ্মণ হয়েও লাভ নেই যদি না কৃষ্ণ প্রেমী না হওয়া যায়।

Comments

Popular Posts